মহিষাদলের রাজবাড়ির দুর্গাপুজো অষ্টমী সন্ধি পুজো কামাল দাগত এখন অতীত
মহালয়ার পরের দিন প্রতিপদ থেকেই শুরু হয় মহিষাদল রাজবাড়ির দুর্গাপুজো। আগেকার সেই জৌলুশ আড়ম্বর আজকে অনেকটাই কমে গেলেও আজও নিয়ম মেনেই প্রতিপদে ঘট স্থাপনের মধ্য দ…
মহিষাদলের রাজবাড়ির দুর্গাপুজো অষ্টমী সন্ধি পুজো কামাল দাগত এখন অতীত
মহালয়ার পরের দিন প্রতিপদ থেকেই শুরু হয় মহিষাদল রাজবাড়ির দুর্গাপুজো। আগেকার সেই জৌলুশ আড়ম্বর আজকে অনেকটাই কমে গেলেও আজও নিয়ম মেনেই প্রতিপদে ঘট স্থাপনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মহিষাদল রাজবাড়ির দুর্গাপুজো। প্রতিমা দর্শন করতে আসেন ভিন রাজ্য, ভিন জেলার দর্শনার্থীরাও। প্রায় ১৭৭৬ সালে মহিষাদল রাজবাড়ির রানি জানকীর আমলে রাজবাড়ির দুর্গাপুজো শুরু হয়। সেই সময় থেকেই মহিষাদল রাজবাড়ির ঠাকুরদালানে দুর্গাপুজো হয়ে আসছে। রাজত্ব চলে যাওয়ার পর থেকে ধীরে ধীরে রাজবাড়ির দুর্গাপুজোর জৌলুস কমেছে। কিন্তু, নিয়ম-আচারে ছেদ পড়েনি। তাই প্রথা অনুযায়ী মহালয়ার পরদিন অর্থাৎ প্রতিপদের দিন ঘটস্থাপন করে মহিষাদল রাজবাড়ির দুর্গাপুজোর সূচনা হয়। উত্তরপ্রদেশের আদি বংশধর এই গর্গ পরিবার। আগে উত্তরপ্রদেশ থেকে ১০৮টি নীল পদ্ম আনা হোত কিন্তু এখন তা হয়না। স্থানীয়ভাবে তা সংগ্রহ করা হয়। রাজবাড়ির রীতি মেনে রাজাদের শিকারের তলোয়ার মায়ের পায়ের তলায় রেখে পুজো করা হয়। প্রতিমার একপাশে ঘট, অন্যপাশে ধান রাখা হয়। এই দুর্গাপুজো করার পরই শুষ্ক গ্রামে ধান ফলেছিল। তাই ভালো ফসলের আশায় আজও দেবীর পাশে ধান রাখা হয়।
আগে মহিষাদল রাজবাড়ির দুর্গাপুজোয় যাত্রাপালা, ভোগ বিতরণ, কামান দেগে সন্ধিপুজো, বিসর্জনের শোভাযাত্র সবই হত। পুজোর দিনগুলিতে ঠাকুরদালানেই যাত্রা হত। রাজবাড়ির মহিলারা পর্দার আড়াল থেকে যাত্রা দেখতেন। পুজোর দিন অনুযায়ী ভোগ রান্না হত। যেমন, ষষ্ঠীতে ছয় মন, সপ্তমীতে সাত মন, অষ্টমীতে আট মন, নবমীতে নয় মন চালের প্রসাদ তৈরি করে বিতরণ করা হত। অষ্টমীর সন্ধ্যায় কামান দেগে রাজবাড়ি সহ আশপাশের এলাকার পুজোমণ্ডপে সন্ধিপুজো শুরু হত। দশমীতে বড় নৌকায় করে শোভাযাত্রা বেরোত এবং রাজবাড়ির সামনে দিয়ে বয়ে যাওয়া হিজলি টাইডাল ক্যানেল হয়ে গেঁওখালিতে রূপনারায়ণ নদীতে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হত। এখন সে সবই অতীত।
মহিষাদল রাজবাড়ির পুজোতে আগে পর্দার আড়াল থেকেই সবকিছু দেখতে হত বাড়ির মহিলা সদস্যদের।এখন সেই আড়াল উঠে গিয়ে সকলের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নেন রাজবাড়ীর মহিলা সদস্যরা।আর এই বিষয়টি খুবই উপভোগ করেন বাড়ির মহিলারাও।
আর এই সাবেকিয়ানার টানে শুধুমাত্র এলাকার বাসিন্দারাই নয়, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষজন আসেন এই মহিষাদল রাজবাড়ির দুর্গাপুজোয়।





No comments