Page Nav

HIDE

Business News

GRID_STYLE

Grid Blog

GRID_STYLE

Post/Page

Weather Location

Classic Header

Breaking News:

latest

ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় 'ডানা'বুধবার দুপুরের মধ্যে মন্দারমণি, দিঘা ছাড়ার নির্দেশ পর্যটকদের

দুপুরের মধ্যে মন্দারমণি দিঘা ছাড়ার নির্দেশ পর্যটকদের  ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় 'ডানা' বুধবার দুপুর ১২টার মধ্যে

 পর্যটকদের উপকূলীয় পর্যটনকেন্দ্র ছাড়ার নির্দেশিকা জারি করল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। এমনকী, ২৩-২৫ অক্টোবর পর্যন্…

 দুপুরের মধ্যে মন্দারমণি দিঘা ছাড়ার নির্দেশ পর্যটকদের  ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় 'ডানা' বুধবার দুপুর ১২টার মধ্যে



 পর্যটকদের উপকূলীয় পর্যটনকেন্দ্র ছাড়ার নির্দেশিকা জারি করল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। এমনকী, ২৩-২৫ অক্টোবর পর্যন্ত নতুন করে হোটেলে বুকিং না নেওয়ার নির্দেশিকাও জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতেই জেলায় পৌঁছবে তিন কোম্পানি এনডিআরএফ। আজ, বুধবার সকাল থেকে দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুর, শঙ্করপুর বিস্তীর্ণ উপকূল এলাকায় সাধারণ মানুষকে সতর্ক করার কাজ শুরু করা হবে বলে জানা গিয়েছে। এদিকে, আলোর উৎসবের আগেই দুর্যোগের অন্ধকার নেমে আসার আশঙ্কায় চিন্তায় রাতের ঘুম উড়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার উপকূলীয় এলাকার মানুষদের। উপকূলের প্রায় ২ লক্ষ মানুষকে ত্রাণশিবিরে সরিয়ে নিয়ে আসার পরিকাঠামো প্রস্তুত করেছে জেলা প্রশাসন। এদিন সকাল থেকে দিঘার উপকূল-সহ অন্যান্য উপকূলীয় এলাকা, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি-সহ জেলা প্রশাসনের কর্তারা ও দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের আধিকারিকরা।

ঘূর্ণিঝড় 'ডানা' মোকাবিলায় পূর্ব মেদিনীপুরে সমুদ্র উপকূল বরাবর পাঁচটি ব্লকে ৬০টি ত্রাণশিবির প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। তার সঙ্গে প্রাথমিক স্কুল ও হাই স্কুলগুলিতেও ত্রাণশিবির তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রামনগর ১ ও ২. কাঁথি ১. দেশপ্রাণ এবং খেজুরি-২ ব্লক প্রশাসনকে প্রতি মুহূর্তে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যেই সমুদ্রে থাকা মৎস্যজীবীরা ফিরে এসেছেন। নবান্ন থেকে প্রতি মুহূর্তে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কাজ করে চলেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। অন্যদিকে, কত সংখ্যক মৎস্যজীবী সমুদ্র থেকে ফিরেছেন, তা নিয়ে দফায় দফায় রিপোর্ট চেয়ে পাঠায় নবান্ন। জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপন অফিসে ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোলরুম চালু করেছে। প্রশাসন। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় সমুদ্র উপকূল বরাবর ৪৩টি মাল্টি পারপাস সাইক্লোন শেল্টার আছে। বিডিওদের কাছে প্রত্যেকটির চাবি রয়েছে। সাইক্লোন সতর্কতায় সেই সব পরিষ্কার করে মানুষের থাকার মতো প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। আরও পাঁচটি মাল্টি পারপাস রেসকিউ শেল্টার (এমপিআরএস) তৈরির কাজ শেষের পথে। তার মধ্যে চারটির কাজ সম্পূর্ণ। ওই চার জায়গায় মানুষকে সরানোর পরিকল্পনাও রয়েছে। এছাড়াও ১৭টি স্থায়ী ফ্লাড শেল্টার রয়েছে। দুর্যোগ পরিস্থিতিতে ওই সব শেল্টারকেও প্রস্তুত রাখছে প্রশাসন। ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইতিমধ্যে মুখ্যসচিব ভার্চুয়াল মিটিং করেছেন। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন, সকল সরকারি দপ্তরের জেলা অফিসার ও ইঞ্জিনিয়ার ওই মিটিংয়ে অংশ নেন। সেখানে সাইক্লোন পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা। পাশাপাশি জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি প্রত্যেক মহকুমা শাসক, বিডিও এবং সরকারি দপ্তরের জেলা অফিসার ও ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে দফায় দফায় মিটিং করেছেন। সেখানে কৃষি, সেচ, জনস্বাস্থ্য, পূর্ত ও বিদ্যুৎ বণ্টন-সহ প্রতিটি দপ্তরকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। কাদের কী দায়িত্ব, সেই সব স্পষ্ট করে দিয়েছেন জেলাশাসক। ঝড়ের সময় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। গাছপালা পড়ে লাইন কেটে যায়। বিভিন্ন জায়গায় খুঁটি, ট্রান্সফর্মার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর জন্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সাপ্লাই অফিস এবং সাবস্টেশনে ঠিকাদারদের অধীনে কর্মীরা থাকবেন। বণ্টন সংস্থার নিজস্ব ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মীদের থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওড়িশা লাগোয়া কাঁথি এবং এগরা মহকুমায় ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। তাই জমা জল দ্রুত বের করার জন্য পাম্প মজুত করার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক। কৃষি-সেচ দপ্তরকে সতর্ক করা হয়েছে। প্রত্যেক বিডিও এবং এসডিও অফিসে ত্রাণসামগ্রী পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনমতো সরবরাহ করা হবে। পর্যাপ্ত পানীয় জলের পাউচ মজুত করা হচ্ছে। নদী ও সমুদ্রবাঁধে নজরদারি বাড়ানোর জন্য সেচ দপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেইমতো দপ্তরের তরফে টিম গঠন করা হয়েছে। কৃষি দপ্তরের তরফেও কাঁথি এবং এগরা মহকুমা এলাকায় মাইকিং-প্রচার শুরু করা হয়েছে।

       পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, "আজ, বুধবার দুপুর ১২টার মধ্যে দিঘা, তাজপুর, মন্দারমণি, শঙ্করপুর-সহ উপকলীয় পর্যটনকেন্দ্র থেকে পর্যটকদের ফিরে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। হোটেলগুলিকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত নতুন করে বুকিং নিতে না বলা হয়েছে। সমুদ্রস্নানে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। উপকূলজুড়ে মাইকিং শুরু হয়েছে। আমরা সমস্ত রকমভাবে

প্রস্তুতি সেরে রেখেছি।" জেলাশাসক আরও বলেন, "কাঁথি ও এগরা মহকুমা এলাকায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে। সেইমতো প্রস্তুতি সেরে রাখা হচ্ছে। জমা জল বের করার জন্য পাম্প তৈরি থাকছে। কোথাও ফসল তোলার মতো পরিস্থিতি হলে সেই শস্য তুলে নেওয়ার জন্য চাষিদের বলা হয়েছে। উপকূল এলাকা থেকে প্রায় ২ লক্ষ মানুষকে ত্রাণশিবিরে সরিয়ে নিয়ে আসার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। গাছ পড়ে গেলে তা দ্রুত সরিয়ে দেওয়ার জন্যে ৫০০ জনের একটি টিম তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।" এদিকে, এদিন দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের দপ্তরে উপকূলীয় এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েত, রামনগর ১ ও ২ ব্লকের আধিকারিকদের নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করা হয়। জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি, সভাধিপতি উত্তম বারিক উপস্থিত ছিলেন। সভাধিপতি উত্তম বারিক বলেন, "পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ৭৬ কিলোমিটার সমুদ্র রয়েছে। ত্রিস্তর পঞ্চায়েত সতর্ক রয়েছে। স্কুলগুলি বুধবার থেকে ছুটি দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি দেখে স্কুল খোলার পুনরায় নির্দেশিকা দেওয়া হবে। জেলাশাসক নিজে পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন। পর্যটকদের উপকূলীয় এলাকা ছেড়ে ফিরে যাওয়ার জন্যে হোটেল সংগঠনগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।"

No comments