বৃহস্পতিবার হলদিয়া পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল সত্যব্রত দাসকে ৭দিনের পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দিল হলদিয়া মহকুমা আদালত। আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে বুধবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে মেডিকেল টেস্…
বৃহস্পতিবার হলদিয়া পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল সত্যব্রত দাসকে ৭দিনের পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দিল হলদিয়া মহকুমা আদালত। আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে বুধবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে মেডিকেল টেস্টের পর এদিন বেলা ১২টা তাঁকে আদালতে আনা হয়। অভিযুক্তের আইনজীবী এদিন আদালতে পুলিসের বিরুদ্ধে তাঁর মক্কেলকে মারধরের অভিযোগ করেন। পুলিস অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। হলদিয়ার এসডিপিও রাহুল পাণ্ডে বলেন,
অভিযুক্তের পক্ষ থেকে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা ভিত্তিহীন। আদালত এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযুক্তের আরও একবার মেডিকেল টেস্ট করানোর নির্দেশ দিয়েছেন। সেই মেডিকেল টেস্ট করানো হবে। তারপর পুলিসি হেফাজতে রেখে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিস। প্রাক্তন চেয়ারম্যান শ্যামলকুমার আদকের দুর্নীতি মামলার সঙ্গে এই কেসের কোথায় যোগসূত্র রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে।
পুলিস জানিয়েছে, শ্যামল আদকের বিরুদ্ধে হলদিয়া পুরসভার টেন্ডার দুর্নীতি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে তৎকালীন চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল সত্যব্রত দাস ওরফে স্বপন দাসকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিস। সত্যব্রতবাবু ওই সময় পুরসভার টেন্ডার কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। গত পাঁচ দিন ধরে তাঁকে ভবানীপুর থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিস। এরইমধ্যে গত ১৩অক্টোবর সুতাহাটা থানায় সত্যব্রতবাবুর নামে পুরসভার একটি উন্নয়নমূলক কাজের টেন্ডার নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ করেন কমলেশ চক্রবর্তী নামে এক প্রবীণ শিক্ষক। তিনি তৃণমূলের নেতা হিসেবে পরিচিত। সুতাহাটা বাজার এলাকায় নয়ানজুলি বুজিয়ে একটি অটো ও টোটো স্ট্যান্ড তৈরি নিয়ে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। জানা গিয়েছে, ২০১৮সালে সত্যব্রতবাবু যখন পুরসভার টেন্ডার কমিটির চেয়ারম্যান, সেই সময় ৫০লক্ষ টাকা খরচে ১নম্বর ওয়ার্ডে সুতাহাটা বাজারে রাজ্য সড়কের পাশে অটো টোটো স্ট্যান্ড করার জন্য টেন্ডার করা হয়।
কমলেশবাবুর অভিযোগ, অটো ও টোটো স্ট্যান্ডের জন্য ৫০লক্ষ টাকা খরচ হয়নি। সরকারি টাকার অপব্যবহার করা হয়েছে। আরও অভিযোগ, ২০২০সালে ফের একই কাজ দেখিয়ে ৫০লক্ষ টাকার বিল তোলা হয়েছে। পুলিস এই অভিযোগ খতিয়ে দেখে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে স্বপনবাবুকে গ্রেপ্তার করে। স্বপনবাবু ২০১৭সাল থেকে ওই ১নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার ছিলেন। ২০২১সালে তিনি তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেন। এদিন আদালতে স্বপনবাবুর আইনজীবী হৃষিকেশ সুকুল দাবি করেন, আপাতদৃষ্টিতে মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে দুর্নীতির কোনও প্রশ্ন নেই। কারণ, এটি নিয়ম অনুযায়ী ই-টেন্ডার করা হয়েছিল। এই কাজ ইঞ্জিনিয়ারের প্ল্যান অনুযায়ী হয়েছে। তারপর পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার সার্টিফিকেট দিয়েছে এবং অডিট কোনও প্রশ্ন তোলেনি। এতদিন পর সত্যব্রত দাসের বিরুদ্ধে উদ্দ্যেশ্যপ্রণোদিতভাবে অভিযোগ করা হচ্ছে। তিনি রাজনৈতিক দল পরিবর্তন করায় প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য মিথ্যে মামলায় জড়ানো হয়েছে।
No comments